ইমেল আজকাল যেকোনো ব্যবসায়িক বা প্রফেশনাল কথোপকথনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরাসরি কথা না বলে নিজের প্রফেশনালিজম প্রমাণ করার ক্ষেত্রে এই ইমেইলের কোনো জুড়ি নেই। সুতরাং এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে যথেষ্ট আকর্ষণীয় করে তোলা চাই। এরই প্রেক্ষিতে চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক Rules Of Email Etiquette।
Golden Rules Of Email Etiquette
মূলত ৪ টি উপায়ের সাহায্যে আমরা আমাদের নিজেদের পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করতে পারি৷ এই ৪ টি মাধ্যমকে যদি আমরা মূল্যায়ন এবং শ্রেণীবদ্ধ করি সেক্ষেত্রে ৪ টি বাক্যে ফোকাস করতে হবে। এগুলি হলো:
- আমরা কী করি
- আমরা কেমন দেখি
- আমরা কী বলি
- আমরা কীভাবে বলি
এই ৪ টি প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমেই আমাদের কমিউনিকেশন নির্ভর করে। ক্যারিয়ারে এই ৪ টি বিষয়কে কাজে লাগিয়ে যোগাযোগ করার বিষয়টিকে ইমেলের মাধ্যমে সহজ করে নেওয়াটা বেশ জরুরি। এমন জরুরতকে গুরুত্ব দিয়ে এবারে জানবো Golden Rules Of Email Etiquette সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ টিপস এবং নিয়মকানুন। সাথেই থাকুন।
মূলত ভালো ফ্রেমযুক্ত ইমেল লিখতে হলে ইমেলের প্রতিটি অংশ সম্পর্কে জানতে হবে। কোন অংশে কোন তথ্য বসবে সেটিও জানতে হবে। চলুন একে একে দেখে নেওয়া যাক একটি সম্পূর্ণ ইমেল কিভাবে, কি কি তথ্যের সাহায্যে তৈরি করতে হয়।
ইমেল স্টার্টিং: Email Etiquette In Career
শুরুতে আপনি যে ব্যক্তিকে ইমেলটি পাঠাবেন তাকে কি সম্বোধন করবেন তা শিউর হয়ে নিন। এক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রে ব্যক্তির পদবী এবং মর্যাদা জেনে প্রাসঙ্গিক কোনো সম্বোধন ব্যবহার করতে পারেন। সর্বোপরি চেষ্টা করুন প্রাপকের প্রথম পদবি ব্যবহার করে অভিবাদন করতে!
যা করবেন না
কখনো বড় কোনো সম্বোধন ব্যবহার করবেন না। ছোট ছোট সম্বোধনই প্রফেশনাল ইমেলকে ফুটিয়ে তুলবে। পাশাপাশি প্রফেশনাল মেইলে কোনো ফানি সম্বোধন করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। তবে বন্ধুবান্ধবকে মেইল পাঠানোর ব্যাপারটা আলাদা!
ইমেইল বডি: Rules Of Email Etiquette
সাধারণ ব্যাকরণের নিয়ম অনুসরণ করে সুন্দরভাবে ইমেল বডি রেডি করুন। ছোট ছোট বা সংক্ষিপ্ত বাক্য অন্তত ইমেল বডিতে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন৷
সেই সাথে ইমেল বডি তৈরি করার সময় প্রতিটি বাক্যের শুরুর প্রথম বর্ণমালাকে বড় করা এবং উপযুক্ত বিরাম চিহ্নের ব্যবহার করার বিষয়গুলি নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন।
মনে রাখবেন আপনি যে ইমেলটি পাঠাচ্ছেন সেটি কোনো বই বা পত্রিকা না। সুতরাং ইমেল বডি অনেক বেশি বড় করবেন না। ছোট রেখেই প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তাগুলি সেরে নিবেন।
যখন ইমেল বডি তৈরি করা হয়ে যাবে তখন ট্রিপল অর্থ্যাৎ তিন বার প্রুফরিডিং করবেন। অনেকেই ইমেল বডি সময় নিয়ে তৈরি করেন ঠিকই, কিন্তু দিনশেষে তা প্রুফরিডিং না করার কারণে প্রফেশনাল ইমেজ নষ্ট করে দেয়। ভুল বানান বা শব্দ দিয়ে তৈরি করা ইমেল কখনোই ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপস হলো ইমেলে কি কি টেক্সট দেবেন তা গুগল ডক ফাইলে সাজিয়ে নেওয়া। এতে প্রয়োজনীয় ফরম্যাটও সহজে এড করতে পারবেন। পরবর্তীতে তা সরাসরি ইমেলে কপি পেস্ট করে দিলেই চলবে so be careful of Email Etiquette In Career।
যা করবেন না – Email Etiquette In Career
আপনার অলসতা এবং গম্ভীর মনোভাব যেনো আপনার ক্যারিয়ারে কোনোরূপ প্রভাব না ফেলে তা নিশ্চিত করার অংশ হিসাবে ইমেলে অতি সংক্ষিপ্ত শব্দ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন।
প্রাথমিক আদান-প্রদানের সময় ব্যবসায়িক যোগাযোগে সবসময় হাস্যরসাত্মক কথাবার্তা বা ফানি টেক্সট ইগনোর করবেন। কখনোই ইমেল চেক না করে সেন্ট করে দেবেন না এবং অবশ্যই এই সময়টাতে টেক্সটের বড়-ছোট করার বিষয়গুলি ঠিক আছে কিনা তা চেক করে নেবেন।
ইমেল Conclusion: Rules Of Email Etiquette
ইমেল পুরোপুরি সাজানো-গোছানো হয়ে গেলে শেষে আপনার সিগনেচার দেবেন। এক্ষেত্রে সিগনেচার না দিতে চাইলে নিজের নাম, পদবীটুকু লিখে দিলেও চলে।
পাশাপাশি শেষের অংশে প্রাপকের উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাতে পারেন। এতে করে কর্মক্ষেত্রে আপনার ব্যাক্তিত্ব ফুটে উঠবে। সবশেষে আপনার সাথে যোগাযোগ করার কোনো একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম মেনশন করে দেবেন।
যা করবেন না
ইমেলের শেষে আপনার ব্যক্তিগত বিবরণ দিতে যাবেন না যেনো। কারণ প্রফেশনাল মেইলে প্রয়োজন ছাড়া ব্যাক্তিগত তথ্য দেওয়াটা বড়ই বেমানান।
Courtesy Of Formal Email Writing
ইতিমধ্যেই আমরা কীভাবে একটি ইমেল তৈরি করা উচিত সে সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা করেছি। এবারে Rules Of Email Etiquette এর অংশ হিসাবে আমরা জানবো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্টেসি, যা না জানলে ইমেল দেখতে বেশ আন প্রফেশনাল লাগে।
- শুরুতেই বলবো আপনার ইমেলের জন্য একটি স্বতন্ত্র নাম খুঁজে নিন। যা হবে প্রফেশনাল ইমেল আইডি।
- ইমেলের সাবজেক্ট লাইন ব্যবহার করার সময় অবশ্যই শুধুমাত্র মেইন সাবজেক্টটি লিখুন। বর্ণনা নয়।
- নিশ্চিত করুন যে আপনার নামটি From বিভাগে সঠিকভাবে দেখানো হয়েছে।
- Cc বিভাগে রেখে যদি আপনি ইমেল করেন সেক্ষেত্রে যাদের কাছে আপনি তথ্য পৌঁছে দিচ্ছেন, তারা প্রতিক্রিয়া করতে পারবেন।
- অন্যদিকে মনে রাখবেন Bcc বিভাগে রেখে যাদের কাছে মেইল করবেন পরবর্তী তারা আপনার সাথে কথা চালাচালি করার সুযোগ পাবে।
- অপরিচিত কাউকে কখনই একজন পরিচিতের ব্যক্তিগত অথবা কাজের ইমেল ঠিকানা দেবেন না।
- আপনি যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, আপনি যে প্রেরকের ইমেল পেয়েছেন তা জানিয়ে দিতে ভুলবেন না।
- ইমেলের উত্তর দিতে গিয়ে সবসময় বিনয়ী থাকার চেষ্টা করুন।
- আপনার প্রফেশনালিজম, আচরণ এবং শিক্ষা যেনো ইমেলে প্রতিফলিত হয় তা নিশ্চিত করুন।
- পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা এবং প্রুফরিড করা ছাড়া কখনোই কোনো প্রফেশনাল মেইল সেন্ড করবেন না।
- প্রাপকদের আংশিক বানান বা ব্যাকরণগতভাবে ভুল ইমেল পাঠাবেন না।
- অন্যের কাছে ইমেল ফরোয়ার্ড করবেন না, ইমেল যতই ভালো হোক বা যতই কমন টপিক হোক।
- মেইলে অনেক বেশি ফন্ট এবং খুব বেশি রং ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
- চেষ্টা করুন ফন্ট হিসাবে Sans Serif, Times New Roman বা Tahoma ফন্ট ব্যবহার করার।
- নির্দিষ্ট ফন্ট অনুযায়ী ৯ থেকে ১২ এর মধ্যে ফন্ট সাইজ বেছে নিন।
- গুরুত্বপূর্ণ কোনো টেক্সট বোঝাতে হাইলাইট করা অংশটিকে বোল্ডে রাখতে পারেন।
- একটি ইমেলে দুইটির বেশি রঙ ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।
- আপনার মেইলগুলিকে স্প্যাম হিসাবে গ্রাহকের কাছে বা প্রাপকের কাছে পাঠাতে না চাইলে অবশ্যই বড় কোনো এটাচ ফাইল পাঠাবেন না।
ইতি কথা
এই ছিলো কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং Golden Rules Of Email Etiquette for Email Etiquette In Career । যা আপনার ক্যারিয়ারকে একটু হলেও অর্থবহ করবে। কারণ ডিজিটাল যুগে এসে বেশি সংখ্যক মানুষ অনলাইনে প্রফেশনাল কাজকর্ম করছে এবং করতে পছন্দ করছে। সুতরাং আপনাকেও টিকে থাকতে হলে এর শামিল হতে হবে।
সেই সাথে নিশ্চিত করতে হবে প্রফেশনাল ম্যানার, প্রফেশনাল সিভি, ক্যারিয়ার গাইডলাইন এবং গুরুত্বপূর্ণ টিপস। সৌভাগ্যবশত এসমস্ত রিসোর্সই আমাদের কাছে আছে। বিস্তারিত জানতে আমাদের পুরো ওয়েবসাইটটি ঘুরে দেখুন। হ্যাপি প্রফেশনাল মোড।